জেলা পরিষদের গঠন
একজন চেয়ারম্যান, পনেরো জন সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের পাঁচ জন মহিলা সদস্য সমম্বয়ে জেলা পরিষদ গঠিত। জেলা পরিষদের মোট পনেরো টি ওয়ার্ড রয়েছে। জেলার সকল সরাসরি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যেমন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ ভাইস-চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, পৌরসভার কাউন্সিলর, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরগণ সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার। নির্বাচিত জেলা পরিষদের মেয়াদ পাঁচ বছর। জাতীয় সংসদ সদস্যগণ জেলা পরিষদের উপদেষ্টা। পরিষদকে সহায়তা ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য একটি অনুমোদিত জনবল কাঠামো রয়েছে। সরকারের উপসচিব পদমর্যাদার একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন সচিব জেলা পরিষদে প্রেষণে নিযুক্ত হন। একজন সহকারী প্রকৌশলী ও অন্যান্য সহায়ক জনবল নিয়ে জেলা পরিষদের যাবতীয় কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়। জেলা পরিষদ গঠনের এ বিধান দেশের তিনটি পার্বত্য জেলার জন্য প্রযোজ্য নয়।
বাধ্যতামূলক কার্যাবলী
১। জেলার সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের পর্যালোচনা।
২। উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা কর্তৃক গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা।
৩। সাধারণ পাঠাগারের ব্যবস্থা ও উহার রক্ষণাবেক্ষণ।
৪। উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা বা সরকার কর্তৃক সংরক্ষিত নহে এই প্রকার জনপথ, কালভার্ট ও ব্রীজ এর নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন।
৫। রাস্তার পাশের্^ ও জনসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে বৃক্ষ রোপন ও উহার সংরক্ষণ।
৬। জনসাধারণের ব্যবহারার্থে উদ্যান, খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা ও উহাদের রক্ষণাবেক্ষণ।
৭। সরকারি, উপজেলা পরিষদ বা পৌরসভার রক্ষণাবেক্ষণে নহে এমন খেয়াঘাটের ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ।
৮। সরাইখানা, ডাকবাংলো এবং বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা ও রক্ষণাবেক্ষণ।
৯। জেলা পরিষদের অনুরূপ কার্যাবলী সম্পাদনরত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতা।
১০। উপজেলা ও পৌরসভাকে সহায়তা, সহযোগিতা এবং উৎসাহ প্রদান।
১১। সরকার কর্তৃক জেলা পরিষদের উপর অর্পিত উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।
১২। সরকার কর্তৃক আরোপিত অন্যান্য কাজ।
ঐচ্ছিক কার্যাবলী
১। শিক্ষা খাতে ১৩টিঃ বিদ্যালয়, ছাত্রাবাস নির্মাণ ও রক্ষনাবেক্ষণ, শিক্ষক প্রশিক্ষণ, ছাত্রবৃত্তির ব্যবস্থা ইত্যাদি।
২। সংস্কৃতি খাতে ১২টিঃ তথ্য কেন্দ্র, জাদুঘর, আর্ট গ্যালারি স্থাপন, পাবলিক লাইব্রেরী নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, ক্রীড়া ও খেলাধূলার উন্নয়ন, জাতীয় দিবসসমূহ উদযাপন, সংস্কৃতি বিকাশে সহযোগিতা প্রদান ইত্যাদি।
৩। সমাজ কল্যাণ খাতে ৯টিঃ দুঃস্থ ব্যক্তিদের জনকল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, সামাজিক সংগঠনকে সহযোগিতা করা ইত্যাদি।
৪। অর্থনৈতিক কল্যাণ খাতে ১৩টিঃ কৃষি খামার স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিপনীবিতান স্থাপন ও সংরক্ষণ, ভ‚মি সংরক্ষণ ও পূনরূদ্ধার, বাঁধ নির্মাণ, সমবায় আন্দোলন গণমুখীকরণ ও অর্থনৈতিক কল্যাণের জন্য অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি।
৫। জনস্বাস্থ্য খাতে ১৬টিঃ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষার উন্নয়ন ও সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধক, চিকিৎসা শিক্ষার উন্নয়ন, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ইত্যাদি।
৬। গণপূর্ত খাতে ৪টিঃ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পানি নিষ্কাশন ও পানি সরবরাহ ইত্যাদি।
৭। সাধারণ খাতে ১৩টিঃ স্থানীয় অধিবাসীদের ধর্মীয়, নৈতিক ও বৈষয়িক উন্নতি সাধন ইত্যাদি।
সূত্র: জেলা পরিষদ আইন-২০০০